Breaking

Tuesday, May 22, 2018

আমি ঠকিনি বন্ধু !!!

মক্কার ধনী উমাইয়া । ধনে-মানে সব দিক দিয়েই কুরাইশদের
একজন প্রধান ব্যক্তি সে। প্রাচুর্যের যেমন তার শেষ নেই, ইসলাম ।
বিদ্বেষেও তার কোন জুড়ি নেই। শিশু ইসলামকে ধ্বংসের কোন
চেষ্টারই সে ক্রটি করে না। এই ঘোরতর ইসলাম বৈরী উমাইয়ারই
একজন ক্রীতদাস ইসলাম গ্রহণ করেছে। তা জানতে পারলো।
উমাইয়া। জানতে পেরে ক্রোধে ফেটে পড়লো সে। অকথ্য
নির্যাতন সে শুরু করলো। প্রহারে জর্জরিত সংজ্ঞাহীন-প্ৰায়
কৃতদাসকে সে নির্দেষ দেয়, “এখনও বলি, মুহাম্মাদের ধর্ম ত্যাগ
কর। নতুবা তোর রক্ষা নেই।”
কিন্তু তার ক্রীতদাস বিশ্বাসে অটল। শত নির্যাতন করেও তার
বিশ্বাসে বিন্দু মাত্র ফাটল ধরানো গেল না। ক্রোধে উন্মাদ হয়ে
পড়লো উমাইয়া। শাস্তির আরো কঠোরতর পথ অনুসরণ করল।
সে।
একদিনের ঘটনা। আরব মরুভূমির মধ্যাহ্ন। আগুনের মত রোদ
নামছে আকাশ থেকে। মরুভূমির বালু যেন টগবগিয়ে ফুটছে।
উমাইয়া তার ক্রীতদাসকে নির্দয়ভাবে প্রহার করলো। তারপর
তাকে সূর্যমুখী করে শুইয়ে দেয়া হলো। ভারি পাথর চাপিয়ে দেয়া
হলো বুকে । কৃতদাসের মুখে কোন অনুনয়বিনয় নেই । মনে নেই
কোন শংকা। চোথে অশ্ম নেই, মুখে কোন আর্তনাদও নেই।
উর্ধমুখী তার প্রসন্ন মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে আল্লাহর প্রশংসা
ধ্বনি- ‘আহাদ', ‘আহাদ'।

ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন হযরত আবু বকর (রা)। ‘আহাদ' ‘আহাদ'
শব্দ তাঁর কানে গেল। অনুসন্ধিৎসু হয়ে শব্দ লক্ষ্যে তিনি মরুভূমির
বুকে শায়িত ক্রীতদাসের সমীপবর্তী হলেন। উমাইয়াকে দেখে
তিনি সব ব্যাপারটাই মনে মনে বুঝে নিলেন। বললেন, “উমাইয়া,
আপনাকে তো ধনী ও বিবেচক লোক বলেই জানতাম। কিন্তু আজ
প্রমাণ পেলাম, আমার ধারণা ঠিক নয়। দাসটি যদি এতই না
পসন্দ, তাকে বিক্রি করে দিলেই পারেন। এমন নির্দয় আচরণ কি
মানুষের কাজ
হযরত আবু বকরের ঔষধে কাজ হলো । উমাইয়া বললেন, “এত
বাহাদুরী দেখাবেন না। দাস আমার এর উপর সদাচার- কদাচার
করবার অধিকার আমারই। তা যদি এতই দয়া লেগে থাকে, তবে
একে কিনে নিলেই পারেন।
হযরত আবু বকর (রা) এই সুযোগেরই অপেক্ষা করছিলেন। তিনি
চট করে রাজী হয়ে গেলেন। একজন শ্বেতাংগ ক্রীতদাস ও দশটি
স্বর্ণ মুদ্রা দিয়ে কিনে নিলেন কৃষ্ণাংগ ক্রীতদাসকে । হযরত আবু
বকর (রা) ক্রীতদাসকে মরুভূমির বুক থেকে টেনে তুলে গা থেকে
ধুলো ঝেড়ে দিলেন। উমাইয়া বিদ্রুপের হাসি হেসে বললেন,
কেমন বোকা তুমি বলত? এ অকৰ্মন্য ভৃত্যটাকে একটি সুবর্ণ
মুদ্রার বিনিময়েই বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলাম। এখন আমার
লাভ ও তোমার ক্ষতি দেখে হাসি সম্বরণ করতে পারছিনা ।”
আবু বকরও (রা) হেসে বললেন, “আমি ঠকিনি বন্ধু! এ
ক্রীতদাসকে কেনার জন্য আমার সমস্ত সম্পত্তি দিতে হলেও আমি
কুষ্ঠিত হতাম না। কিন্তু একে আমি ধারণাতীত সস্তা মূল্যে ক্রয়
করে নিয়ে চললাম
এ দাসটিই ছিলেন বিশ্ব বিক্রত বিলাল । ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন।
হযরত বিলাল (রা)

No comments:

Post a Comment